Recent

কথায় কথায় সেলফি তুলতে ব্যস্ত, কিন্তু সেলফি সম্পর্কে এই ১০ টি তথ্য জানেন কি ?

শিশু থেকে বৃদ্ধ এমন কেউ নেই, যিনি নিজের ছবি দেখতে পছন্দ করেন না। আর আত্মতুষ্টির নতুন অনুষঙ্গের নাম সেলফি। তরুণ প্রজন্ম কথায় কথায় সেলফি তুলতে ব্যস্ত। সেলফি নিয়ে গবেষণাও হয়েছে বিস্তর। সেখানে বলা হয়েছে, বেশি বেশি সেলফি যারা তোলেন, তাদের মধ্যে কিছুটা মানসিক সমস্যা থাকতে পারে।
নিজে নিজের ছবি তোলার এই চর্চাকে মাঝে কিছু বিজ্ঞানী এক ধরনের মেন্টাল ডিসঅর্ডার হিসেবে দাবি করলেও তা দিয়ে মানুষের সেলফিপ্রীতিকে দমানো সম্ভব হয়নি; বরং ‘সেলফি-রোগ’ তরুণদের অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন বয়সী মানুষের মাঝে। সিনেমা-নাটকের তারকা থেকে শুরু করে খেলোয়াড়, সংগীতশিল্পী, রাজনীতিবিদ, এমনকি বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্রনেতা পর্যন্ত সময় পেলে কিছু সেলফি তুলে নিচ্ছেন।
সেলফির উপলক্ষ যাই হোক, তুলতে হবে বুঝে-শুনে। সাধারণভাবে ছবি তোলার মতো সেলফি তোলাও একটি শিল্প। একটা ভাল সেলফি আপনার মন ভাল করে দেয়। আর এসব ছবি ছড়িয়ে যাচ্ছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম কিংবা ফ্লিকারের মতো সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে। শুধু সেলফি তুললেই কি আর হয়, সেলফি নিয়ে তো কিছু বিষয়ও জেনে রাখা দরকার!
১. সেলফির ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, পৃথিবীর সর্বপ্রথম ‘সেলফি’টি তোলা হয়েছিল ১৮৩৯ সালে! আমেরিকায় রবার্ট কর্নেলিয়াস নামের এক ফটোগ্রাফার মানব-ইতিহাসের সর্বপ্রথম সেলফিটি তোলেন। ড্যাগেরোটাইপ পদ্ধতিতে তোলা ছবিটি নিয়ে খানিক বিতর্ক থাকলেও ছবিটি এ বিরল সম্মাননা দাবি করতেই পারে। পুরোনো প্রযুক্তিতে শুধু একটি মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দী করতে কর্নেলিয়াসের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল পুরো এক মিনিট!
২. দুনিয়াজুড়ে ‘সেলফি’ শব্দটির তুমুল জনপ্রিয়তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে অক্সফোর্ড ডিকশনারি তাদের অভিধানে ‘সেলফি’ শব্দটি প্রবেশ করায়। শুধু অভিধানে জায়গা দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, ২০১৩ সালের ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার’-এর খেতাবটিও ‘সেলফি’-কে প্রদান করে তারা।
৩. মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য প্রাণীও পিছিয়ে নেই সেলফি তোলা থেকে। ২০১১ সালে ডেভিড স্ল্যাটার নামের এক ফটোগ্রাফার এক জঙ্গলে তাঁর ক্যামেরাটি রাখলে এক বানর এসে তা দিয়ে মনের অজান্তেই এক সেলফি তুলে ফেলে। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া সেলফিটির মতো জনপ্রিয়তা এখন পর্যন্ত কিম কারদাশিয়ানের কোনো সেলফিও ছুঁতে পারেনি।
৪. বারাক ওবামার তোলা সেলফিকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সেলফি হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে ২০১৪ সালের অস্কার অনুষ্ঠানে তোলা এলেন ডিজেনেরেসের সেলফিটি। প্রায় ৩৪ লাখ টুইটার ব্যবহারকারী ছবিটি রিটুইট করেছে এবং ফেভারিট করেছে প্রায় ২০ লাখ। ইন্টারনেটে অ্যালেন ডিজেনেরেসের সেলফি হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও সেলফিটি আসলে তোলা হয়েছিল ব্র্যাডলি কুপারের হাতে।
৫. এক জরিপে প্রায় ৪৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ স্বীকার করে নেন যে তাঁরা সেলফি তুলতে ভালোবাসেন। ১৮ থেকে ৩৪ বছর পর্যন্ত ব্যক্তিরা বলেছেন, সপ্তাহে অন্তত একটা সেলফি তোলা তাঁদের চাই-ই চাই! আর সেলফি তোলার ক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে আছে মেয়েরা। অনুপাতটি প্রায় ১.৩ : ১।
৬. তবে ছেলেরা খুব বেশিদিন মনে হয় পিছিয়ে থাকবে না এই শিল্পে। গুগল জানায়, অসংখ্যবার ছেলেরা ‘বয়েজ সেলফি টিপস’ লিখে সার্চ দিয়েছে গুগলে। অথচ মেয়েদের সেলফি টিপস চেয়ে প্রায় কখনোই সার্চ করা হয়নি!
৭. সেলফি তোলাকে পশ্চিমা সংস্কৃতি হিসেবে গণ্য করা হলেও পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সেলফি তোলা মানুষের বসবাস এশিয়ার একটি শহরে। এক গবেষণায় বের হয়েছে, ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের মানুষ সবচেয়ে বেশি সেলফি তোলে এবং দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নিউইয়র্কের ম্যানহাটন।
৮. সেলফি তোলা দেশের মধ্যে এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। জানা যায়, দেশটির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কখনো না কখনো সেলফি তোলে। তবে এ ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাডের সেলফি-প্রীতি। টুইটারে নিয়মিত তিনি আপলোড করতে থাকেন একের পর এক সেলফি।
৯. সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে সেলফি আপলোডের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ফেসবুকই। মোট সেলফির প্রায় ৪৮ শতাংশ আপলোড করা হয় এখানে। তবে ‘সেলফি’ শব্দটি সবার আগে ব্যবহার করা ফ্লিকারে। তাও সেই ২০০৪ সালে!
১০. নিজেদের মনের ফুর্তির বাইরে সেলফি বেশ ভালো কিছু কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার সচেতনতার জন্য ‘নো মেকআপ সেলফি’ নামক এক অনলাইন ক্যাম্পেইন চালানো হয়। সে প্রচারে নামীদামি অনেক তারকা মেকআপ ছাড়া তাঁদের সেলফি তুলে ইন্টারনেটে আপলোড করেন। ক্যাম্পেইনটি থেকে প্রায় সাড়ে ১২ মিলিয়ন ডলার ফান্ড পাওয়া যায় ক্যান্সার গবেষণার জন্য।

Discovery Bangladesh Designed by Templateism.com Copyright © 2014

Powered by Blogger.
Published By Blogger Templates20