মাত্র চার ডলারে স্মার্টফোন বাজারে আনার ঘোষণা দিয়ে এক ভারতীয় কোম্পানি এ বছরের শুরুতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল।
‘রিংগিং বেলস’ নামের ভারতীয় কোম্পানিটি এখন বলছে, তাদের সেই বহু প্রত্যাশিত স্মার্ট ফোনের দুই লাখ সেট এখন বাজারে ছাড়ার জন্য প্রস্তুত।
অ্যান্ড্রয়েড চালিত এই ফোনটির নাম ‘ফ্রিডম ২৫১’ এবং এর দাম ঠিক করা হয়েছে ২৫১ রূপী।
কিন্তু এই স্মার্টফোন আসলে কতটা কাজের?
বিবিসির শিল্পা কানান দিল্লিতে নিজে ফোনটি পরীক্ষা করে দেখছিলেন এবং অন্যান্যদের কাছে জানতে চাইছিলেন।
ফোনটি হাতে নিলে অ্যাপলের আইফোন-ফাইভ এর সঙ্গে কিছু মিল দেখা যাবে। আর প্রায় পানির দামের এই স্মার্টফোনের স্পেসিফিকেশন একেবারে খারাপ নয়।
তবে হাতে নিয়ে ব্যবহার করে দেখা গেল এটা একটা বেসিক স্মার্টফোনের মতো কাজ করে। এটিতে যেহেতু মাত্র অল্প কয়েকটি অ্যাপ, তাই এর সক্ষমতা পরীক্ষা করা মুশকিল। যেমন এটিতে আছে ক্যালকুলেটর, মিউজিক প্লেয়ার, ওয়েব ব্রাউজার এবং ইমেল। তবে সেটটি নিয়ে লোকের অনেক প্রশ্ন।
ভারতীয় পার্লামেন্টের একজন সদস্য কিরিট সোমাইয়া তো এত সস্তায় স্মার্টফোনের দাবিকে এক বিরাট ‘কেলেংকারি’ বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন। ভারতীয় সেলুলার এসোসিয়েশনের প্রধানও বলেছেন, এটি কোন কেলেংকারি বা কৌতুক বলে মনে হচ্ছে তার।
ফোনটির প্রদর্শনীতে কোম্পানির প্রধান মোহিত গোয়েল প্রথমে জানালেন, এটি ৩০শে জুন বাজারে ছাড়া হবে। কিন্তু পরে বলা হলো, এটি বাজারে আসবে ৭ই জুলাই। কিন্তু এত সস্তায় তারা লক্ষ লক্ষ সেট বাজারে ছাড়তে পারবে কিনা সেই প্রশ্ন এখনো আছে।
রিংগিং বেলসের মালিক মোহিত গোয়েল এই সস্তার ফোনে কোন ফাঁকি বা জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করছেন। মিস্টার গোয়েলের পরিবার বহু দশক ধরে শুকনো ফল বিক্রির ব্যবসায় জড়িত। তিনি বলছেন, ডিজিটাল ভারতের অংশ হওয়ার স্বপ্ন থেকে তিনি এরকম সস্তায় স্মার্টফোন বাজারে আনার চিন্তা শুরু করেন।
ভারতে যে এরকম একটি সস্তার স্মার্টফোনের চাহিদা আছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। ভারত বিশ্বে মোবাইল ফোনের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। মিস্টার গোয়েল জানান, তার কোম্পানি তাইওয়ান থেকে নামমাত্র মূল্যে এই ফোনের যন্ত্রাংশ আমদানি করছে, এরপর উত্তর ভারতের হরিদ্বারের কারখানায় সেগুলো জোড়া দিয়ে সেট তৈরি করা হয়েছে।
তিনি দাবি করছেন ফোনটি তৈরিতে যদিও এক হাজার ১৮০ রূপী খরচ পড়ছে, তারপরও তিনি এটি ২৫১ রূপীতে বিক্রি করবেন। তিনি আশা করছেন, এটিতে প্রি-ইনস্টল করা অ্যাপস থেকে তার খরচ কিছুটা উঠে আসবে, তারপরও যদিও প্রতি সেটে দেড়শো রুপী লোকসান যাবে।