সচরাচর এমন অনুরোধের কথা শোনা যায় না। শোনেনওনি এইমস-এর চিকিত্সকেরা। তাই প্রথম যখন অনুরোধটি এসেছিল, কী করবেন ভেবে উঠতে পারেননি। শেষে নিয়মাবলী ঘেঁটে দেখা যায়, স্পষ্ট কোনও নির্দেশ নেই সেখানে। আর সে কারণেই সদ্য স্বামী হারানো এক যুবতীর অনুরোধটি রাখা সম্ভব হল না।
মা হতে চেয়েছিলেন ওই যুবতী। স্বামীর বীর্যেই নিজের গর্ভে ধারণ করতে চেয়েছিলেন সন্তানকে। যদিও তার কিছু ক্ষণ আগে তাঁর স্বামী ওই হাসপাতালেই মারা গিয়েছেন। চিকিত্সকদের কাছে যুবতী অনুরোধ করেন, মৃত স্বামীর দেহ থেকে বীর্ষ সংরক্ষণ করে তাঁর দেহে আইভিএফ পদ্ধতিতে তা নিষিক্ত করা হোক। শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও ওই যুবতীর পাশে দাঁড়ান।
বছর কয়েক আগেই ওই দম্পতির বিয়ে হয়। কিন্তু, কোনও সন্তান হয়নি তাঁদের। স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পরে সন্তানের এমন ভাবে জন্ম দিতে চাওয়ার অনুরোধটি তাই ফেলতে পারেননি চিকিত্সকেরা। কিন্তু, এ দেশে তো পোস্টমর্টেম স্পার্ম রেট্রিভ্যাল’-এর কোনও নিয়ম নেই। চিকিত্সাবিধিতেও স্পষ্ট ভাবে এর কোনও উল্লেখ নেই। তাই, ফিরিয়ে দিতে হল মাতৃত্বের এমন অনুরোধ।
এর পরেই এইমস-এর চিকিৎসকেরা হিউম্যান রিপ্রোডাকটিভ সায়েন্স’ জার্নালে সরব হন। এমন পরিস্থিতি এড়াতে তাঁরা পোস্টমর্টেম স্পার্ম রেট্রিভ্যাল’ নিয়ে সুস্পষ্ট নিয়মের দাবি তোলেন।
তাঁদের মতে, সময় এখন অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। এক জন তাঁর পছন্দের ব্যক্তির বীর্যেই মা হতে চাইতে পারেন। ব্যক্তির পাশাপাশি যা সমাজের কল্যাণেই কাজে আসবে। ফরেন্সিক সায়েন্সের এক চিকিত্সকের কথায়, পোস্টমর্টেম স্পার্ম রেট্রিভ্যাল খুব সহজ একটি বিষয়। মৃত্যুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই কাজটা করে ফেলতে হয়। কিন্তু, বিষয়টির সঙ্গে নৈতিক এবং আইনি বিষয়গুলো জড়িয়ে রয়েছে বলেই আমাদের হাত-পা বাঁধা।’