হলিউডে গরমের মৌসুম মানেই জমকালো সব আয়োজন। এই আয়োজনে নতুন মাত্রা দিতে জুনে মুক্তি পাচ্ছে আটটি নতুন সিনেমা, যা চলচ্চিত্র প্রেমীদের মনের খোরাক মেটাবে ভাল করেই।
ফ্রি স্টেইট অফ জোনস
শ্রেণী সংগ্রামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে কর্মী এবং সংগঠনের মধ্যবর্তী বিরোধ নিয়ে আসছে নতুন সিনেমা 'ফ্রি স্টেইট অফ জোনস'। মার্কিন গৃহযুদ্ধ চলাকালীন পরিস্থিতিতে নিউট নাইট নামের এক দক্ষিণাঞ্চলের কৃষক অন্যান্যদের সংঘবদ্ধ করে মিসিসিপির ঐক্যজোট থেকে নিজেদের স্বতন্ত্র করার সংগ্রামে। এই সিনেমা দিয়েই দুবছর পর পর্দায় ফিরছেন অস্কারজয়ী অভিনেতা ম্যাথিউ ম্যাকনোহে। সিনেমাটি নির্মাণ করছেন চার বার অস্কার মনোনয়ন জেতা নির্মাতা গ্যারি রস। জুনের ২৪ তারিখ সিনেমাটি মুক্তি পাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
দ্য নিওন ডিমন
এ বছরে কান চলচ্চিত্র উৎসবের সবচেয়ে মতবিরোধ সৃষ্টিকারী সিনেমা বলা হচ্ছে 'দ্য নিওন ডিমন'কে। ড্যানিশ নির্মাতা নিকোলাস ওয়াইন্ডিং রেন নির্মিত সিনেমাটির ভাষা বেশ রহস্যঘেরা এবং কিছু ক্ষেত্রে দুঃস্বপ্নের মতও বটে। সিনেমাটির প্রশংসায় যেমন পঞ্চমুখ হয়েছেন অনেকেই, তেমনি সিনেমার গল্প বলার ধরণটিকে রীতিমত গালি গালাজ করেছেন বাকিরা। লস এঞ্জেলসের এক উঠতি মডেলের জনপ্রিয়তার পথে বীভৎস ঘটনাগুলো নিয়েই এক কড়া বার্তা ছুড়ে দিবে সিনেমাটি দর্শকদের কাছে। এলি ফ্যানিং অভিনীত এই সিনেমাটি মুক্তি পাবে জুনের ২৪ তারিখে।
ফাইন্ডিং ডোরি
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সিক্যুয়াল 'ফাইন্ডিং ডোরি' মুক্তির অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকদিনের। ২০০৩ সালে ডিজনি পিক্সারের ব্যানারে নির্মিত 'ফাইন্ডিং নিমো'র তুমুল জনপ্রিয়তা নির্মাতাদের রসদ জোগায় নতুন আরেকটি সিনেমা নির্মাণে, তবে এজন্য সিনেমার ভক্তদের অপেক্ষা করতে হলো দীর্ঘ ১৩ বছর। এবার কোন ক্লাউনফিশ নয়, কেন্দ্রীয় মঞ্চের আলো থাকবে ব্লু ট্যাং ফিশ ডোরির উপর। তবে এবারের সিনেমা ভিন্নতা পাচ্ছে অভিনব এক রাজনৈতিক বার্তার কারণে। 'ফাইন্ডিং নিমো' মুক্তির পর ক্লাউনফিশের জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গে উঠেছিল যে, থাইল্যান্ডে ক্লাউনফিশের আকাল পড়ে যায় বিভিন্ন বাসার অ্যাকিউরিয়ামে রাখার জন্য বাজার থেকে কিনে নেওয়ায়। ব্লু ট্যাং প্রজাতিরও যেন একই দশা না হয়, তাই 'ফাইন্ডিং ডোরি' সিনেমার সঙ্গে ডিজনির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে একটি পিটিশন, যেখানে এই প্রজাতির মাছটির সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবী জানানো হয়েছে। এলিন ডিজেনারেস, ইদ্রিস এলবা, ডমিনিক ওয়েস্ট এবং ডায়ানে কিটন এবার কণ্ঠ দিয়েছেন অ্যানিমেটেড সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে। সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে জুনের ১৬ তারিখে।
ইন্ডিপেন্ডেন্স ডেঃ রিসারঞ্জেন্স
দীর্ঘ দু দশক পর পৃথিবী আরেক দফা ভিনগ্রহের প্রাণীদের আক্রমণের মুখে। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পেয়ে সিনেমা অনুরাগীদের কাছে তুমুল সাড়া ফেলে দিয়েছিল 'ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে'। ভিনগ্রহের প্রাণীদের হাত থেকে পৃথিবী বাঁচানোর লড়াইয়ে সভ্যতা ধ্বংসের মুখোমুখি হয় পুরো মানবজাতি। আর সেই হুমকি আবারও ফিরছে সিনেমার সিকুয়ালে। ক্যাপ্টেন হিলারের চরিত্রে অবশ্য উইল স্মিথের উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছেন না দর্শকরা। ক্যাপ্টেন হিলারের অনুপস্থিতিতে এবার দৃশ্যপটে এগিয়ে আসে তরুণ সৈনিক জেইক মরিসন, যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিয়াম হেমসওয়ার্থ। এবারের সিনেমার প্রেক্ষাপটে আছে রাজনৈতিক বার্তাও। চিত্রনাট্য লেখক ডেভিড ডেলভিন জানিয়েছেন, নতুন সিনেমার ধারণা তার মাথায় আসে ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের প্রলয়ঙ্কারি জঙ্গী হামলাকে ঘিরে। জেফ গোল্ডবাম, বিল পুলম্যান, জুড হার্শ, ভিভিকা. এ ফক্স এবং ব্রেন্ট স্পাইনাররা এর মত তারকারা ফিরছেন তাদের নিজেদের চরিত্রতেই। নতুন চরিত্রগুলোতে অভিনয় করেছেন জেসি আশার, মাইকা মনরো, সেলা ওয়ার্ড এবং শারোলেট গিন্সবার্গ। সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে জুনের ২২ তারিখে।
দ্য বিএফজি
সিনেমাটিকে বলা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের 'ই.টি', যে সিনেমা দিয়ে হলিউডকে আশির দশকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিলেন কিংবদন্তী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। পরিচালক-অভিনেতা জুটি হিসেবে স্পিলবার্গ আর মার্ক রিল্যান্স 'ব্রিজ অফ স্পাইজ' এর পর ফিরছেন 'দ্য বিএফজি' নামের এই অ্যানিমেটেড সিনেমায়। এক বিশালদেহী দানবের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অস্কারজয়ী মার্ক রিল্যান্স। বাবা মা হারানো একাকী সোফি একদিন হঠাতই খোঁজ পায় এক অদ্ভুত দানবের। তবে এই দানব আর দশটা দানবের মত ভয়ঙ্কর নয়, বরং সোফির সর্বক্ষণের সঙ্গীতে পরিণত হয়ে যায় সে। সিনেমাতে 'ই.টি'র ছোঁয়াও পাবেন দর্শকরা, কেননা সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন মেলিসা ম্যাথিসন, যিনি 'ই.টি'র চিত্রনাট্যও লিখেছিলেন। গত নভেম্বরে গত হওয়া মেলিসাকে স্পিলবার্গ উৎসর্গ করেছেন তার 'দ্য বিএফজি' সিনেমাটি। মুক্তি পাচ্ছে জুনের ৩০ তারিখে।